আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক। আবারো হাজির হয়ে গেলাম আপনাদের সামনে নতুন একটি সাবজেক্ট রিভিউ টিউটোরিয়াল নিয়ে। আজকে আপনাদের সামনে ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং সাবজেক্ট রিভিউ সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করবো। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের জনপ্রিয় একটি সাবজেক্ট হলো ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং।
তবে এই সাবজেক্ট নিয়ে আমাদের বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন থাকে। ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং কাকে বলে,ফুড ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন ও ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যারিয়ার ইত্যাদি। আপনার যদি এ বিষয়গুলো সম্পর্কে জানার থাকে। তাহলে আজকের আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়বেন। চলুন আজকের মূল আলোচনা শুরু করি।
ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং কাকে বলে
ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং হলো খাদ্য ও এই বিষয়ক শিল্পসমূহের একটি বিশেষ শাখা যার সাথে মাইক্রোবায়োলজি, ফলিত ভৌতবিজ্ঞান, রসায়ন সম্পর্কযুক্ত। কৃষি প্রকৌশল, যন্ত্র প্রকৌশল, এবং রসায়ন প্রকৌশল এই শাখার সাথে সম্পর্কযুক্ত হলেও তা সীমিত। ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বা খাদ্য প্রকৌশলীরা কার্যকরী খরচে খাদ্য উৎপাদন ও বাণিজ্যিকরণের লক্ষে প্রায়োগিক জ্ঞান দেন।
ফুড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে কেন পড়বো
বর্তমান সময়ে ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং সাবজেক্টের জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বা খাদ্য প্রকৌশলী মূলত খাদ্য/বায়োলজিক্যাল বা ফার্মাসিটিউক্যাল উৎপাদন প্রক্রিয়ার নকশা তৈরি ও স্থাপন উদ্ভিদ উৎপাদন এর জন্য ব্যবস্থাপনা ও কারিগরি সহায়তা করে থাকে।
বর্তমান পৃথিবীতে দিন দিন ফুড ইন্ডাস্ট্রির সংখ্যা বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে আমাদের দেশে ফুড ইন্ডাস্ট্রি প্রতিষ্ঠান অতি দ্রুতই গড়ে উঠছে। ভবিষ্যতে ফুড ইন্ডাস্ট্রি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার অনেক গুণ সম্ভাবনা রয়েছে। তাহলে আপনি ভাবুন দীর্ঘ ১০ বছর পরে বাংলাদেশ ও বিশ্বের প্রায় সকল দেশেই কিন্তু ফুড ইন্ডাস্ট্রির সংখ্যা বেড়ে যাবে।
যখনই বিশ্ব বা আমাদের দেশে ফুড ইন্ডাস্ট্রির সংখ্যা বেড়ে যাবে,তখন কিন্তু একজন ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং এর দাম অনেক গুণ বেড়ে যাবে। তাহলে ক্যারিয়ার হিসেবে অবশ্যই আপনি ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং সাবজেক্ট বেছে নিতে পারেন। এই সাবজেক্ট নিয়ে আপনি যদি ভালোভাবে পড়াশোনা করতে পারেন। তাহলে ভবিষ্যতে ভালো একটি পর্যায়ে আসতে পারবেন। আপনি পড়ছেন ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং সাবজেক্ট রিভিউ সম্পর্কে এই আর্টিকেলে।
এছাড়াও যারা রান্না বিষয়ক বা খাদ্য বিষয়ক কাজে অধিক আগ্রহী। তাদের জন্য কিন্তু পড়াশোনা করার মতো তেমন কোন সাবজেক্ট ছিল না। বিশেষ করে আমাদের দেশে এক সময় খাদ্য বিষয়ক কোনো সাবজেক্ট চালু করা হয় হয়নি। তারপর থেকে বিশ্বের সাথে আমাদের দেশ যখন তাল মিলিয়ে চলতে থাকলো। তখন থেকেই মূলত আমাদের দেশে ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং সাবজেক্ট এর প্রবর্তন হয়।
এখন প্রায় আমাদের দেশের অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং সাবজেক্টে অনার্স ও মাস্টার্স পাশ করে। ছেলেদের তুলনায় মূলত মেয়েরা এই সাবজেক্টের প্রতি বেশি আগ্রহী হয়। কারণ মেয়েরা রান্না বিষয়ক কাজগুলো বেশি পছন্দ করে।
এছাড়াও যে সকল শিক্ষার্থীরা অনার্স ও মাস্টার্স করার সময় পার্ট টাইম চাকরি করতে চাচ্ছেন। তারা সবাই চায় একটি সহজ সাবজেক্টে অনার্সে পড়তে। তেমনই সহজ একটা সাবজেক্ট হলো ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং। যা একজন শিক্ষার্থী পার্ট টাইম চাকরির পাশাপাশি এই বিষয়ে অনার্স করতে পারে।
ফুট ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনা ও বিশ্ববিদ্যালয়
আমাদের দেশের প্রায় সকল সরকারি পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটে ফুট ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ চালু করা হয়েছে। আপনি আপনার নিকটস্থ সরকারি পলিটেকনিক্যাল থেকে এই সাবজেক্টে অনার্স ও মাস্টার্স করতে পারেন। চলুন দেখে নেই কোন কোন সরকারের পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটে আপনি এই সাবজেক্ট নিয়ে পড়তে পারবেন। তাহলে ভবিষ্যতে ভালো একটি পর্যায়ে আসতে পারবেন। পূর্বের অনুচ্ছেদে আপনি ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং সাবজেক্ট রিভিউ সম্পর্কে এই আর্টিকেলে পড়ে নিয়েছেন কেন এই সাবজেক্ট আমরা পড়বো।
- হাজী মোহাম্মদ দীনেশ সাইন্স এন্ড টেকনোলজি ইউনিভার্সিটি
- বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল বিশ্ববিদ্যালয়
- মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
- যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
- রাজশাহী ইউনিভার্সিটি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি
- ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়
- ঢাকা ইউনিভার্সিটি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি
- শাহজালাল ইউনিভার্সিটি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি
- নোয়াখালী সাইন্স এন্ড টেকনোলজি ইউনিভার্সিটি
ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যারিয়ার ও চাকরি
ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং যেহেতু নতুন একটি সাবজেক্ট তাই চাকরির বিষয়ে সবার অনেক দ্বিধাদ্বন্দ্ব রয়েছে। অনেকে মনে করে এই বিষয়ে পড়াশুনা করলে চাকরি পাওয়া অনেক কঠিন। আমরা সবাই জানি পৃথিবীতে বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য একটি উপাদান হলো খাদ্য। যা মানুষের মৌলিক অধিকারের মধ্যে অন্যতম একটি।
কিন্তু বেঁচে থাকার জন্য অবশ্যই আমাকে আপনাকে নিরাপদ খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। এই কারণে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন পর্যবেক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণাবেক্ষণ সকল কাজের দায়িত্ব পালন করে একজন ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং। এছাড়াও খাদ্যের গুণগতমান পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ইত্যাদি কাজে তারা সহায়তা করে। তাহলে বর্তমান সময়ে কিন্তু খাদ্য প্রকৌশলের অনেক দরকার।
বর্তমান সময়ে আমাদের গ্রাম কিংবা শহরে বিভিন্ন জায়গায় কিন্তু ফুট ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠছে। ফুড ইন্ডাস্ট্রির সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। পৃথিবীতে ফুড ইন্ডাস্ট্রির সংখ্যা যত বাড়বে। ততই একজন ফুড ইঞ্জিনিয়ারের চাহিদা বাড়বে। তাহলে বলা যেতে পারে ফুঊ ইঞ্জিনিয়ারিং এর চাহিদা অনেক বেশি।
ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স কমপ্লিট করার পর আপনাকে অবশ্যই ভালো একটি চাকরি পেতে হবে। আপনি যদি ভালো একটি চাকরি পেতে চান তাহলে অবশ্যই ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পড়ালেখা করতে পারেন। আমাদের দেশের সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আপনি চাকরি পেতে পারেন।
বিশেষ করে খাদ্য মন্ত্রণালয়, সরকারি পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট, খাদ্য ও পণ্যমান নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও বিভিন্ন সরকারি কলেজে চাকরি পাবেন। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে বসুন্ধরা, ফ্রেশ, বিডি ফুড,এস এলম ফুড ও সিটি ফুড গ্রুপে অসংখ্য গ্রুপে প্রতিবছর হাজার হাজার জনগণ নিয়োগ দেওয়া হয়।
এছাড়াও বিসিএস, বিভিন্ন পুষ্টিবিদ হাসপাতাল,ফুড ইন্ডাস্ট্রি, এনজিও, খাদ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয় চাকরি পাওয়ার সুযোগ আছে। আবার এই সাবজেক্ট নিয়ে দেশের বাইরে স্কলারশিপ পাওয়ার সুবিধা রয়েছে। যারা বিদেশে এই সাবজেক্ট নিয়ে স্কলারশিপ নিয়ে যেতে পারবে। তারা বিদেশের বিভিন্ন ফুড ইন্ডাস্ট্রিতে কর্মরত হওয়ার সুযোগ পাবে।
তাই বলা যেতে পারে ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বা খাদ্য প্রকৌশলের ক্যারিয়ার ও ভবিষ্যৎ অনেক বেশি উজ্জ্বল। তাই আপনি এই বিষয়ে অবশ্যই পড়াশোনা করতে পারেন। এই বিষয়ে পড়াশোনা করলে অবশ্যই আপনার ভবিষ্যৎ অনেক বেশি উন্নত হবে।
শেষ কথাঃ আজকে ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং সাবজেক্ট রিভিউ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা। আশা করি,আপনি ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং সাবজেক্ট বিষয়ে সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন। ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং সাবজেক্ট ক্যারিয়ার অনেক বেশি উজ্জ্বল। এছাড়াও পড়াশোনা শেষ করার পর আপনি খুব সহজে এ বিষয় নিয়ে চাকরি পাবেন। এছাড়াও খাদ্য প্রকৌশলী বিষয় সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানার জন্য একজন শিক্ষক বা শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলতে পারেন।