ইসুজন এর নতুন একটি পোষ্টে আপনাকে স্বাগতম। এই ব্লগে একটি আবেগি ভালোবাসার গল্প আপনাদেরকে শোনাবো। পুরো গল্পটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য বিনীত অনুরোধ রইলো। চলুন তাহলে আরম্ভ করা যাক-
ভালোবাসা এত সুন্দর কে জানতো! যদি না আমার নীরার সাথে কোন দিনও দেখা না হতো? আমাদের প্রথম দেখা হয় এইচ এস সি এর পর ভার্সিটির ভর্তি কোচিং এ। প্রথম দিন আমি তাকে দেখি কোচিং এর ভাইয়াদের একটা প্রশ্ন করতে। সেদিনই প্রথম নোটিশ করি। কিন্তু সাহস করে কখনো কথা বলিনি। এবং কি সামনে দিয়ে গেলে কখনো চোখ তুলে তাকাতে পারিনি।
কোচিং শেষে আমরা একি পথ দিয়ে ফিরতাম বাসায়৷ সে কখনো আগ্রহ দেখায়নি আমার প্রতি তাই আমারো কখনো সহস হয় নি। শুধু কোন রকম পথটা আগে পিছে করে একসাথে হেঁটে আসা। কথা হয় নি আমাদের কোন দিন!
আমি থাকতাম মেসে, তাই বাসায় ফিরার সব সময় একটা তাড়া থাকতো। কারণ আমার নিজের সব আমাকেই দেখাশোনা করতে হতো। কিন্তু যখন নীরা আমার সামনে দিয়ে হাঁটতো আমার গতি হয়ে যেতো পিঁপড়ের মত। একসময় জীবনের সাথে সাথে সেই গতিও বাড়লো।
পরীক্ষার আগে আগে কোচিং এর সব মডেল টেস্ট গুলো দিয়ে আমরা সবাই তখন পরীক্ষার জন্যে বাসায় প্রস্তুতি নিচ্ছি। এই দিকে নীরার জন্যে আমার মনটা অদ্ভুত ভাবে ছটফট করতো। ভাবতাম একবার যদি দেখতে পেতাম নীরাকে! কখনো কখনো অসহ্য হয়ে আমি বের হয়ে তার বাসা যেদিকে সে দিকে কিছুদূর হেঁটে কোন দোকানে গিয়ে দাঁড়িয়ে অজানা কিছুর আশায় অপেক্ষা করতাম৷ যদিও আমি জানতাম না তার বাসা ঠিক কোনটা।
আমি তখনো জানিনা আমি তাকে ভালোবাসছি কিনা, প্রেমে পড়ছি কিনা। অত কিছু তখন আসলে ভাবারও সময় ছিল না। কারণ নীরা নিজেও কোন আগ্রহ দেখায় নি। আমি খুব একটা পাত্তা না দিয়ে পড়ে যেতে লাগলাম নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে। এভাবে একসময় পরীক্ষা দিতে গেলাম, সে এক মহাসমুদ্র। লাখ লাখ ভর্তি পরীক্ষার্থী। বেশ ভালো পরীক্ষা দিয়ে ফুরফুরে মেজাজে যখন বের হচ্ছি হুট করে চোখ পড়ে গেলো এক নীল পরীর দিকে!
আমি কয়েক সেকেন্ডের জন্যে থমকে গেলাম!!
না! সে আর কেউ না, নীরা!
বন্ধু যদি এই আবেগি ভালোবাসার গল্প তোমার পছন্দ হয়, প্লিজ তোমার বন্ধুর সাথে শেয়ার করে দিও। এ ধরণের আরও পোষ্টে ভরপুর রয়েছে আবেগ ক্যাটাগরীতে। ভিজিট করতে একদম ই ভুলবেনা কিন্তু। চলো তাহলে আবার পড়া শুরু করি।
চট্টগ্রাম ইউনিভার্সিটিতে আমি যে ফ্যাকাল্টিতে পরীক্ষা দিলাম ঠিক সেই ফ্যাকাল্টিতে সেও দিলো। এটা তো জানা কথাই। আমি তখন ভাবনা শূণ্য। আমি জানিনা আমার কেন এমন হলো। আমি তাকে একবার ডাকতেও সাহস করলাম না।
পারলাম না। সে আমার চোখের সামনে দিয়ে হেঁটে চলে গেলো। মিশে গেলো হাজার মানুষের ভিড়ে। তাকে চোখে হারিয়ে আমার চোখ ভিজে উঠলো। বন্ধুরা জিজ্ঞেস করলো ধাক্কা দিয়ে, কিরে পরীক্ষার কিছু হইছে? চোখ ভেজা কেন তোর?
আমি সম্বিত ফিরে পেয়ে দ্রুত চোখ মুছে জবাব দিলাম,আরে না চোখে ধুলা নাকি কি পড়লো।
সে দিন আমি উদাস মনে বাসায় ফিরি,আর সৃষ্টিকর্তার কাছে একটাই জিনিস চাই নীরা যাতে টিকে যায়! কেন এমন চাইলাম জানিনা। হয়তো নিজের অজান্তে আমি নিজেকে নীরাকে দিয়ে ফেলেছি ততক্ষণে।
দুদিন পর রেজাল্ট হলো,আমি ঠিকই চলে আসলাম কিন্তু নীরা? আমার মন ছটফট করতে লাগলো আমি কিভাবে নিরার খবর পাবো?
না পারতে বন্ধুদের বিষয়টা জানালে, আমার বেশ দুষ্ট একটা বন্ধু কোচিং থেকেই নিয়ে নিলো নীরার ফোন নাম্বার।
ব্যাস সেই শুরু, আমি নীরাকে ভয়ে ভয়ে কল করলাম। তার গলা আর হাসি শুনে আমার বুঝতে অসুবিধা হলো না কি হয়েছে! একটা শীতল আরাম বোধ হলো আমার। তারপর আমি তাকে পরিচয় দিলাম আর তার সুসংবাদ জেনে নিলাম।
তারপর থেকে আজ ৩ বছর আমরা একি সাথে আছি! আমি তাকে বলতে হয় নি,সেই বুঝে নিয়েছে আমি কি পরিমাণ তাকে আমার জীবনে চাই। আমাদের সম্পর্কের বয়স ৩ বছর! হ্যাঁ!
কিন্তু সম্পূর্ণ পারফেক্ট বলে কিছু হয় না বলে কথা আছে একটা।
ওহে বন্ধু! আরও একটু বিরক্ত করছি। তোমার জীবনের ও যদি আবেগি ভালোবাসার গল্প থকে তবে আমাদেরকে ইমেইল করতে পারো esujonbd@gmail.com এ। মানসম্মত হলে আমরা তোমার পোষ্টটি আমাদের ওয়েবসাইটে প্রচার করবো।
গত ২ দিন আমাদের জীবনে যা হচ্ছে তা এই না হওয়ারই লক্ষণ! এই দুই দিন আমি হাসপাতালের ব্যাডে! আমি জানিনা আমার জীবনে কি হতে যাচ্ছে! আমি কি হারাচ্ছি।
আজ রাতেই হবে আমার পায়ের আরেকটা অপারেশন! গত পরশু দিন ,নীরা স্টেশনে অপেক্ষা করছে অনেক্ষণ, আমার বন্ধুদের সাথে দেখা করে যেতে যেতে দেরি হয়ে গেলো। কোন রকম দৌঁড়ে নীরার কাছে পৌঁছানোর চিন্তায় আমি তখন জ্ঞানশূণ্য।
প্লাটফর্মে আটকে গেলো আমার পা! কিছুতেই টানা হেছড়া করে নিতে পারছি না,আমি চিৎকার করছি, অন্ধকার দেখছি।
ততক্ষণে যা হবার হয়ে গেলো, দিনের শেষ শাটল চলে গেলো আমার পায়ের উপর দিয়ে! তারপর কিছু মনে নেই।
চোখ খুলে দেখি আমি হসপিটালের ব্যাডে। অনুভব করতে পারছি না নিজের ডান পা! সেই অবস্থাতেও আমি নীরা ছাড়া কিছু ভাবতে পারছি না।
অনেকেই আমাকে দেখতে এসেছে। ভার্সিটির জুনিয়ররা, অনেকেই প্রশ্ন করছে আমার কি হবে এখন! আমি শুধু হেসে উত্তর দিলাম, আমার একটু ভালো ঘুম হলেই হবে কেবল। আর সব ম্যানেজ করা যাবে!
কারণ ততক্ষণে আমি পেয়ে গেছি আমার নীরার গায়ের সুগন্ধি। আমি জানি সে আসছে!
বন্ধু এই আবেগি ভালোবাসার গল্প তোমার কেমন লেগেছে অবশ্যই তা কমেন্ট করে জানাবে। আমাদের আরও গল্প পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে পারো। আর তোমার লিখা কোনো গল্প যদি আমাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রকাশ করতে চাও তাহলে ইমেইল (esujonbd@gmail.com) এর মাধ্যমে যোগাযোগ করতে ভুলবে না। ধন্যবাদ পোষ্টটি পড়ার জন্য।